BS-1 স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের নিয়ে আলোচনায় স্পেস-এক্স

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মিশন সফল হওয়ার রোমাঞ্চিত মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্সের কর্মকর্তারাও। তাদের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে গতকাল শুক্রবার উৎক্ষেপণ করা হয় স্যাটেলাইটটি। উৎক্ষেপণ করার ৩৩ মিনিট পর সেটি জিওস্টেশনারি ট্রান্সফার অরবিটে পৌঁছানো সম্ভব হয়।

এ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য প্রথমবারের মতো ফ্যালকন-৯ ব্লক ৫ রকেট ব্যবহার করা হয়েছে। এ মডেলের রকেটের চূড়ান্ত ও হালনাগাদ সংস্করণ ছিল এটি। এ রকেট এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে কম রক্ষণাবেক্ষণ করেই ১০ বা তার বেশিবার ব্যবহার করা যাবে।

রকেট উৎক্ষেপণের স্টেজ ছিল দুটি। নির্দিষ্ট উচ্চতায় পৌঁছে রকেটের স্টেজ-১ খুলে যায়। কাজ শুরু করে স্টেজ-২। এরপর সফলভাবে পৃথিবীতে ফিরে আসে স্টেজ-১ এবং নেমে আসে আটলান্টিকে ভাসমান ড্রোন শিপে। ফ্যালকন-৯-এর স্টেজ-২ পৌঁছে যায় জিওস্টেশনারি ট্রান্সফার অরবিটে। মহাশূন্যে ভাসতে থাকে বাংলাদেশের প্রথম যোগাযোগ স্যাটেলাইট। এরপর বঙ্গবন্ধু-১-এর নিয়ন্ত্রণ নেয় যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়ার তিনটি গ্রাউন্ড স্টেশন। মহাকাশের ১১৯.১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে নিজস্ব অরবিটাল স্লটে জায়গা করে নিতে ৩৬ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটকে।

এ মিশনের গুরুত্ব সম্পর্কে এক বিবৃতিতে স্পেসএক্স বলেছে, বাংলাদেশের প্রথম জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইটটি ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট লঞ্চিং প্রজেক্ট’ নামে উন্নয়ন করা হয়। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) তত্ত্বাবধানে স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনাল (এসপিআই) এতে কারিগরি সহায়তা দেয়। স্যাটেলাইটে ২৫ কু-ব্যান্ড ও ১৪ সি-ব্যান্ড ট্রান্সপন্ডার রয়েছে, যা তৈরি করেছে থ্যালেস অ্যালিনা স্পেস। এটি তৈরি হয়েছে স্পেসবাস ৪০০০ বি ২ প্ল্যাটফর্মে, যা বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএসসিএল) পরিচালনা করবে।

বাংলাদেশ ও আশপাশের এলাকায় সেবা দিতে পারবে এ স্যাটেলাইট। বাংলাদেশ ও বঙ্গোপসাগরের জলসীমা এর কু-ব্যান্ডের অধীনে থাকবে। এর সঙ্গে ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়ায় সেবা দিতে পারবে। এ ছাড়া ডিটিএইচ সেবা, ভিডিও ও ভিস্যাট সেবা দিতে পারবে দেশজুড়ে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগ দিতে সক্ষম হবে। কমপক্ষে ১৫ বছর এ মিশন অব্যাহত থাকবে।

Related posts

Leave a Comment